লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাপ পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর

বিশেষ প্রতিনিধি
বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী আলো মজুমদারের (৩৭) লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে সোমবার সকালে মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের কথা বলে বরিশাল নগরীর কাশিপুরের বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সদর নৌ থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, তাদের পারিবারিক কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। তার মানসিক সমস্যা ছিল বলে জানিয়েছেন ভাই মঞ্জু মজুমদার। এর আগে তিনি সোমবার রাতে বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি সুন্দরবন-১৬ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন।
মৃত আলো মজুমদার (৩৭) এয়ারপোর্ট থানাধীন কাশিপুরের পশ্চিম ইছাকাঠির বাসিন্দা অনুপ রায়ের স্ত্রী ও দুই সন্তানের মা। স্বামী অনুপ পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আলো বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরেরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের মেয়ে।
আলো মজুমদারের ভাই মঞ্জু মজুমদার বলেন, তিনি (আলো) মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। সোমবার সকালে মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি বাসায় না ফেরায় নগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের কেরানি মো. বাবুল বলেন, রাত ১১টার দিকে লঞ্চ বামনীচর এলাকা অতিক্রমকালে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দেন। এরপর ওই নারীকে উদ্ধারে দুই ঘণ্টা সন্ধান চালিয়েও ব্যর্থ হই। পরে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে বিষয়টি জানিয়ে লঞ্চ গন্তব্যে রওনা দেয়।
সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের যাত্রী রায়হান মাসুদ বলেন, সোমবার রাতে লঞ্চটি চরমোনাই এলাকা অতিক্রম করার সময় এক নারীযাত্রী লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চের নাবিক এবং যাত্রীরা ওই নারীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বাসিন্দা আল-আমিন বলেন, নদীতে কিছু ভাসতে দেখে সন্দেহ হয়। পরে বুঝতে পারেন সেটি একটি লাশ। এরপর তিনি ৯৯৯-এ ফোন করেন। খবর পেয়ে নৌ পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে।
বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করি। আমরা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখছি।
বরিশাল নগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির সিকদার জানিয়েছেন, মৃত আলো রানী মজুমদারের বড় বোন মঞ্জু রানী মজুমদার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সেখানে তিনি মৃত আলো রানী মজুমদার মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং ওই দিন সকাল ১০টায় বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ বলে উল্লেখ করেন। ডিজির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে মঙ্গলবার জানতে পারেন, ওই নারীর মরদেহ কীর্তনখোলা নদীতে পাওয়া গেছে। তদন্ত ছাড়া নেপথ্যের ঘটনা সম্পর্কে কেউ বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *